ভারতীয় ফুটবল দলে সদ্য অভিষেক হওয়া দশ ফুটবলারকে নিয়ে আগেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলের ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচ। এ বার তাঁদের নিয়ে আশার কথা শোনালেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক তারকা ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গনও। এত ভাল এক ঝাঁক নতুন ফুটবলার একসঙ্গে ভারতীয় ফুটবলে আগে কখনও উঠে এসেছে কি না, তা মনে করতে পারছেন না এই অভিজ্ঞ ফুটবলার।

বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে ওমানের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে একসঙ্গে দশজন ফুটবলারের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়। প্রথম এগারোয় ছিলেন ছজন। পরে পরিবর্ত হিসেবে আরও চারজনকে নামান কোচ স্টিমাচ। সদ্য হয়ে যাওয়া হিরো আইএসএল ৭ থেকে উঠে আসা এই এক ঝাঁক তরুণ ফুটবলার সম্পর্কে দলনেতা সন্দেশ বলেন, খুব কম কথাতেই ওদের নিয়ে বলা যায়। ওরা এই সফর নিয়ে যথেষ্ট উদ্বুদ্ধ ও উজ্জীবিত। অবশ্যই প্রত্যেক ফুটবলারকে শান্ত ও বুদ্ধিমান হতে হয়। কিন্তু বিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে জিততে গেলে আগ্রাসনেরও প্রয়োজন। এই ছেলেগুলোর মধ্যে কিন্তু এ সবই আছে। সেই আগ্রাসী মনোভাব, যখন বল পায়ে পায়, তখন মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে। ওদের নেতৃত্ব দেওয়াটা তাই আমার পক্ষে বেশ সহজই ছিল

শনিবার এআইএফএফ মিডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে এই কথাগুলো বলেন এটিকে মোহনবাগানের নির্ভরযোগ্য সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ২৭ বছর বয়সি সন্দেশ। তিনি নিজে ২০১৫-য় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নোপালের বিরুদ্ধে যে ম্যাচে প্রথম ভারতের জার্সি গায়ে নেমেছিলেন, সেই ম্যাচেও তাঁকে নিয়ে সাতজন ফুটবলারের অভিষেক ঘটেছিল। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে তখন ওটাই ছিল নজির। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে যা হল, তা নতুন মাইলফলক তৈরি করে দিল।

দশজনের অভিষেক হলেও ফিফা ক্রমতালিকায় ২৩ ধাপ ওপরে থাকা ওমানকে রুখে দেয় ভারত। প্রথমার্ধে জড়তা থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে যথেষ্ট ভাল ফুটবল খেলে ১-১ ড্র করে তারা। এই পারফরম্যান্স দেশের ফুটবল মহলে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। এবং এই ফলের জেরে আগামী সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্যও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেল তারা। সে দিন মোট ২৭ জনের মধ্যে ১৭ জন ফুটবলারকে মাঠে নামিয়ে পরখ করে নেন স্টিমাচ। সোমবার আমিরশাহীর বিরুদ্ধে ম্যাচে অন্যদেরও নামিয়ে দেখে নিতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

ভারতীয় ফুটবলে এই নতুন প্রজন্মের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে সন্দেশ বলেন, যে কোনও দেশেই নিয়মিত নতুন প্রতিভা উঠে আসা খুব জরুরি। সে খেলা হোক বা বিজ্ঞান। ইউথ ডেভলপমেন্ট থেকে প্রতি বছরই সন্দেশ ঝিঙ্গন, সুনীল ছেত্রী, গুরপ্রীত সিং সান্ধু এবং অন্যদের বিকল্প পাওয়া যেতে পারে। এর ফলে প্রতি বছর ভারতীয় দল উন্নতি করবে। ইংল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়ামের মতো বিশ্বের প্রথম সারির ফুটবলখেলিয়ে দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। ওরাও কিন্তু এই দর্শনই অনুসরণ করে চলে। আমাদের ছেলেগুলো এত ভাল প্রশিক্ষণ পেয়েছে দেখে খুবই ভাল লাগছে। আমাদের দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ খুবই ইতিবাচক মনে হচ্ছে

ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়ে সন্দেশ বলেন, মনে হচ্ছিল ওদের সঙ্গে আমিও ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথম মাঠে নেমেছি। নিজের অভিষেকের দিনটাতে ফিরে গিয়েছিলাম। মা-কে ফোন করে খবরটা দেওয়ার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। ঘটনাটা যে ২০১৫-র, তা মনেই হচ্ছিল না। যেন সে দিনেরই ঘটনা। নতুন ছেলেদের যে রকম মানসিকতা ও প্রতিভা দেখলাম, তাতে আমি নিশ্চিত যে আমাদের দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল