লিগশিল্ডজয়ী জামশেদপুর এফসি-র সঙ্গে ১-১ ড্র করে হিরো আইএসএলের ফাইনালে উঠে পড়ল কেরালা ব্লাস্টার্স। মঙ্গলবার তিলক ময়দান স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এই ড্র করে মোট গোলের বিচারে (২-১) রবিবারের খেতাবি লড়াইয়ে মাঠে নামার যোগ্যতা অর্জন করল তারা। শুক্রবার প্রথম লেগে তারা ইস্পাতনগরীর দলকে হারিয়েছিল ১-০-য়। সেই জয়ের সুবাদেই ২০১৬-র পর প্রথম হিরো আইএসএল ফাইনালে উঠল তারা। 

এ দিন ১৮ মিনিটের মাথায় আদ্রিয়ান লুনার অসাধারণ গোল এগিয়ে দেয় কেরালা ব্লাস্টার্সকে। ৫০ মিনিটের মাথায় প্রণয় হালদার জামশেদপুরের হয়ে গোল শোধ করলেও ফাইনালে ওঠার জন্য তাদের আরও একটি গোলের প্রয়োজন ছিল, যা শেষ পর্যন্ত পায়নি তারা। ফলে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয় না পেয়েও ফাইনালে উঠে পড়ল দু’বারের রানার্স আপ দলটি। ছ’বছর আগে শেষবার ফাইনালে উঠলেও এটিকে এফসি-র কাছে হেরে খেতাব জেতা হয়নি তাদের। এ বার কাদের মুখোমুখি হয় তারা, সেটাই দেখার।

প্রথম লেগে সাহাল আব্দুল সামাদের গোলে জেতে ২০১৪-য় প্রথম হিরো আইএসএলের আসরের রানার্স আপরা। সেই গোলও এ বার তাদের ফাইনালে উঠতে সাহায্য করল। দুই সেমিফাইনাল মিলিয়ে মোট স্কোর ২-১ হওয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে খেলার ছাড়পত্র অর্জন করে নিল তারা।

গত ম্যাচের গোলদাতা সাহালকে ছাড়াই এ দিন মাঠে নামে ব্লাস্টার্স। চোটের জন্য এ দিন মাঠে নামতে পারেননি তিনি। তবে তাঁর সতীর্থরা এ দিন তাঁর অভাব বুঝতে দেননি। চার মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় কেরালার দল। কিন্তু আলভারো ভাস্কেজ শুধু গোলকিপার রেহনেশকে সামনে পেয়েও গোলের বাইরে শট নেন।  

ব্লাস্টার্সের মিডফিল্ডার আয়ূশ অধিকারী এ দিন পরপর দুটো গোলের সুযোগ পান। প্রথমবার গোল প্রায় সাজিয়ে দেন ভাস্কেজ এবং পরেরবার জর্জ ডিয়াজের ক্রস থেকে সুযোগ পেয়ে যান তিনি। কিন্তু কোনও বারই সফল হননি। যথাক্রমে রেহনেশ ও পিটার হার্টলে বাধা হয়ে দাঁড়ান। ভাস্কেজই এ দিন লুনাকে গোলের পাসটি সরবরাহ করেন বাঁ দিকের উইং থেকে। লুনার মাপা শট ক্রমশ গতিপথ বদলে গোলে ঢুকে যায়। বাঁ দিকে ডাইভ দিয়েও তা বাঁচাতে পারেননি রেহনিশ।

গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইস্পাতনগরীর দলের ফুটবলাররা। জলপানের বিরতির পর ড্যানিয়েল চিমা চুকুউ বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দিলেও তিনি অফসাইড থাকায় তা বাতিল হয়ে যায়। এর পরে গ্রেগ স্টুয়ার্টের গোলমুখী ফ্রিকিক ঘুষি মেরে বার করে দেন কেরালার গোলকিপার প্রভসুখন গিল।

সতীর্থরা ব্যর্থ হলেও বিরতির পর খেলা শুরু হতেই সাফল্য পেয়ে যান বঙ্গ মিডফিল্ডার প্রণয় হালদার। স্টুয়ার্টের কর্নার থেকে চিমা হেড করলে প্রণয়ের গায়ে লেগে তা গোলে ঢুকে যায়। তবে পরে টিভি রিপ্লে দেখে অনেকের মনে হয়েছে, বল প্রণয়ের হাতে লেগে গোলে ঢোকে। তবে রেফারিদের চোখ তা এড়িয়ে যায়।

এর ঠিক এক মিনিটের মধ্যে ভাস্কেজের গোলমুখী জোরালো শট রেহনেশের হাত ছুঁয়ে গোলের দিকে গেলেও গোললাইন সেভ করেন এলি সাবিয়া। কেরালা অবশ্য হাল ছাড়েনি। তাদের ডিফেন্ডার মার্কো লেসকোভিচের হেড যেমন লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, তেমনই জর্জ দিয়াজের লব বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। এই দুই সুযোগের মাঝখানে জামশেদপুরের মিডফিল্ডার জিতেন্দ্র সিংয়ের হেড গোলে ঢোকার মুখে ফের গোললাইন সেভ করেন দিয়াজ। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট দুয়েক আগে ইশান পন্ডিত ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে হেড করলেও তা সোজা গিলের হাতে গিয়ে জমা হয়। এর পরে আর কোনও বড় সুযোগ পায়নি তারা।