সম্প্রতি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এফসি গোয়ার পারফরম্যান্স যেমন ভারতীয় ফুটবলমহলে প্রশংসা পেয়েছে, তেমনই গোয়ায় অংশ নিতে আসা বিদেশি দলগুলিও ব্যাপক প্রশংসা করেছে লিগের এই গ্রুপ পর্বের আয়োজনের।

এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্লাব-লিগের গ্রুপ ই (পশ্চিমাঞ্চল) পর্বের সবকটি খেলাই হয় ফতোরদার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। এফসি গোয়া এই প্রথম ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে সরাসরি গ্রুপ পর্বে অংশ নেয়। তারা ছাড়াও ইরানের পার্সেপোলিস, কাতারের আরাইয়ান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর আল ওয়াহদা ছিল গ্রুপের বাকি তিনটি দল। আল রাইয়ানকে পিছনে ফেলে কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই চার দলের মধ্যে তিন নম্বরে থেকে লিগ শেষ করে ভারতের প্রতিনিধিরা।

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে রেখে এত সুষ্ঠুভাবে গ্রুপ লিগের খেলাগুলি যে আয়োজন করতে পেরেছে ভারত, তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিদেশি দলের কোচ, কর্তারা। ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপ ফুটবলজয়ী দলের সদস্য ও আল রাইয়ানের প্রধান কোচ লরাঁ ব্লা যেমন। তিনি প্রায় দুসপ্তাহ গোয়ায় কাটানোর পরে তাঁর উপলব্ধি, এই গ্রুপের খেলাগুলোর আয়োজন দেখে আমার মনে হয়েছে, খুবই ভাল। আমি জানি, (এ রকম কঠিন সময়ে) এত বড় লিগের খেলা আয়োজন করা মোটেই সোজা নয়। তাই আয়োজকদের অসংখ্য ধন্যবাদ

প্রসঙ্গত এর আগেই প্রায় পাঁচ মাস ধরে ১১টি দলকে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে রেখে হিরো আইএসএল ২০২০-২১-এর ১১৫টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে এই ফতোরদা স্টেডিয়াম-সহ আরও দুটি স্টেডিয়ামে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই ম্যাচগুলির আয়োজন করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলে আসা ও বহু অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক ফুটবলের পরিকাঠামো দেখে আসা লরাঁ ব্লাঁ-র মুখে শোনা গিয়েছে ফতোরদার মাঠের প্রশংসাও। তিনি বলেন, এখানকার পরিবেশ, বিশেষ করে মাঠ খুবই ভাল। সম্প্রতি এই মাঠে অনেক ম্যাচ হয়েছে বলে শুনেছি। তা সত্ত্বেও মাঠের অবস্থা সত্যিই খুব ভাল রয়েছে। এ ভাবে স্বাগত জানানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সবকিছু খুবই আন্তরিক। আশা করি পরের বছরও এখানে আসতে পারব

গ্রুপের শীর্ষে থাকা ইরানের পার্সেপোলিস এফসি-র কোচ ইয়াহিয়া গোলমোহাম্মাদির গলাতেও শোনা গেল আয়োজন নিয়ে প্রশংসা। এই ম্যাচগুলো এখানে আয়োজনের জন্য ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই। যা আতিথেয়তা এখানে পেয়েছি, সে জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি মানুষকে আমার ধন্যবাদ। প্রত্যেকে তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন, বলেন ইয়াহিয়া, যাঁর দল ছটির মধ্যে পাঁচটিতেই জিতে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গিয়েছে। গত তিন মরশুমে দুবার ফাইনালে ওঠা এই ক্লাবের কোচ তাঁদের সাফল্যে ভারতীয় ফুটবল প্রেমীদের খুশি হওয়া দেখেও অভিভূত।   

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে এসে যে আমরা নতুন কিছু সমর্থক পেয়েছি, এতেই আমি খুব খুশি। এতেই বোঝা যায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কতটা ভাল। এই দেশের মানুষগুলো খুবই অতিথবৎসল ও বন্ধুত্বপূর্ণ। সংস্কৃতির দিক থেকেও আমাদের দুই দেশের অনেক মিল রয়েছে। (আশা করি) ফুটবল এই সম্পর্ক, বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। দুই দেশের মধ্যে শান্তির বাতাবরণ বজায় রাখতেও সাহায্য করবে