সেই চেনা দাপট, চেনা চমক। কলকাতা ডার্বিতে এটিকে মোহনবাগানের আধিপত্য এতটুকু কমল না। এ বার এসসি ইস্টবেঙ্গল দল বদলে, অনেক বেশি প্রস্তুতি নিয়ে হিরো আইএসএলের আসরে নামলেও চিরপ্রতিদ্বন্দী সবুজ-মেরুন বাহিনীকে আটকানোর জায়গাতে যে এখনও পৌঁছতে পারেনি, তা বোঝা গেল শনিবার সন্ধ্যায়, ভাস্কোর তিলক ময়দান স্টেডিয়ামে। ২৩ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়া এটিকে মোহনবাগানকে বাকি সময়টা কোনও রকমে ঠেকিয়ে রাখে তারা। নিজেদের ভুলেও ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে তারা। না হলে, ম্যাচটা আরও বেশি ব্যবধানে জিততে পারত তারা। 

এসসি ইস্টবেঙ্গল ম্যাচটা আক্রমণাত্মক মেজাজে শুরু করলেও দশ মিনট পর থেকে ম্যাচের রাশ নিয়ে নেয় এটিকে মোহনবাগান। ১৪ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোলে এগিয়ে যায় তারা। রয় কৃষ্ণা ও মনবীর সিং দলকে এগিয়ে দেওয়ার পরে ২৩ মিনিটের মাথায় ফের চিরপ্রতিদ্বন্দীরা ধাক্কা খায় লিস্টন কোলাসোর সুযোগসন্ধানী গোলে। এই গোলের সময় অভাবনীয় ভুল করতে দেখা যায় এ বছরই সবুজ-মেরুন থেকে লাল-হলুদ শিবিরে আসা গোলকিপার ও অধিনায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে। শুধু ভুল করেন তিনি, তা নয়, চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলেও যেতে হয় তাঁকে। এই অবস্থায় বিপর্যস্ত এসসি ইস্টবেঙ্গল শিবির আর খেলায় ফিরতে পারেনি। সারা ম্যাচে একটি শটও গোলে রাখতে পারেনি তারা।

  • ১২ মিনিট: ১-০। ডান দিকের উইং দিয়ে অনেকটা ওভারল্যাপ করে ওঠা প্রীতম কোটালের মাইনাস থেকে রয় কৃষ্ণা অসাধারণ ভলিতে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন।
  • ১৪ মিনিট: ২-০। কাউকোর বাড়ানো থ্রু থেকেই বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে ওঠা মনবীর বক্সে ঢুকে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণ থেকে প্রথম পোস্ট দিয়েই গোল করেন।
  • ২৩ মিনিট: ৩-০। বাঁ দিক দিয়ে ওঠা লিস্টন কোলাসোকে বক্সের মাথায় এসে আটকাতে যান অরিন্দম। তাঁর হাত ফস্কে বেরিয়ে যাওয়া বল নিয়ে গোলে কোণাকুণি শট নেন কোলাসো।
  • ৩১ মিনিট: বাঁ দিক দিয়ে প্রীতমের ক্রস কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি কাউকো। পা ছোঁয়ালেই গোল হত।
  • ৩৮ মিনিট: গোলের বাঁ দিক থেকে কঠিন কোণ থেকে দ্বিতীয় পোস্টের দিকে ক্রস করেন বুমৌস। কিন্তু পোস্টের কয়েক ইঞ্চি বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায় বল।
  • ৫৬ মিনিট: বক্সের মধ্যে গোলের সামনে কাউকোকে বল সাজিয়ে দেন বুমৌস। কিন্তু কাউকো গোলে শট নেওয়ার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়ে বলের দখল নেন গোলকিপার শুভম।

এ দিন এসসি ইস্টবেঙ্গল তাদের দল সাজায় ৩-৪-৩-এ, সামনে নাওরেম মহেশ, আন্তোনিও পেরোসেভিচ ও মহম্মদ রফিককে রেখে। এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণে ছিলেন তিন বিদেশি রয় কৃষ্ণা, হুগো বুমৌস ও ইওনি কাউকো। মনবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোকে মাঝমাঠের দুই প্রান্ত থেকে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং মাঝখানে রাখা হয় লেনি রড্রিগেজকে। বোঝাই যাচ্ছে ৪-৩-৩-এ দল সাজান কোচ হাবাস। লাল-হলুদ শিবিরের মাঝমাঠে এ দিন ছিলেন ডাচ ফুটবলার ড্যারেন সিডোল। তাঁর সঙ্গে হামতে এবং দুই দিকে জয়নার লরেন্সো ও বিকাশ জায়রু। চারটি পরিবর্তন হয় এ দিন এসসি ইস্টবেঙ্গল দলে। হীরা মন্ডল, জ্যাকিচন্দ, ড্যানিয়েল চিমাকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখেই এ দিন দল নামান কোচ হোসে মানুয়েল দিয়াজ। অন্যদিকে গত ম্যাচের মতোই সবুজ-মেরুন রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন ডেভিড উইলিয়ামস, প্রবীর দাসরা। প্রথম এগারোয় কোনও পরিবর্তন ছিল না।  

প্রথম মিনিট থেকেই বিপক্ষকে চাপে রাখার প্রবণতা দেখা যায় এসসি ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে। দু’মিনিটের মধ্যেই কর্নার আদায় করে নেয় তারা। এটিকে মোহনবাগান শুরুর দশ মিনিট চার ব্যাকে খেলার পর থেকে তিন ব্যাকে চলে আসে এবং ১৪ মিনিটের মধ্যে দু’গোলে এগিয়ে যায় তারা। দীপক টাঙরি ডিফেন্স থেকে মাঝমাঠে উঠে আসার পরেই সবুজ-মেরুন শিবিরের মেজাজ পুরো পাল্টে যায় এবং ডান দিকের উইং দিয়ে অনেকটা ওভারল্যাপ করে ওঠা প্রীতম কোটালের মাইনাস থেকে রয় কৃষ্ণা অসাধারণ ভলিতে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন।

প্রথম ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই এসসি ইস্টবেঙ্গল ফের ধাক্কা খায় দু’মিনিট পরেই। এ বার মনবীরকে গোলটা তৈরি করে দেন ইওনি কাউকো। গত ম্যাচে যিনি সমর্থকদের মনে ছাপ ফেলতে পারেননি, এ বার তিনিই হয়ে উঠলেন ‘গোলমেকার’। তাঁর বাড়ানো থ্রু থেকেই বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে ওঠা মনবীর বক্সে ঢুকে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণ থেকে প্রথম পোস্ট দিয়ে গোল করেন। লাল-হলুদ গোলকিপার অরিন্দম প্রথম পোস্টে থাকা সত্বেও তাঁর শট আটকাতে পারেননি।

অরিন্দমকে এ দিন একেবারেই চেনা মেজাজে পাওয়া যায়নি। দেখে মনে হচ্ছিল, হয় চোট পেয়েছেন তিনি, নয় মনসংযোগের অভাব হচ্ছে তাঁর। ২৩ মিনিটের মাথায় যে ভাবে তৃতীয় গোলটি হজম করেন গত মরশুমের গোল্ডেন গ্লাভজয়ী, তা অপ্রত্যাশিত এবং অভাবনীয়ও। বাঁ দিক দিয়ে ওঠা লিস্টন কোলাসোকে বক্সের ডান দিকে এসে আটকাতে যান অরিন্দম। কোলাসো পায়ে বল পাওয়ার আগেই অরিন্দম তা কেড়ে নিলেও সেই বল তাঁর হাত ফস্কে বেরিয়ে যায় এবং সেই ফস্কানো বল নিয়ে গোলে কোণাকুণি শট নেন কোলাসো। মাঝমাঠ থেকে লিস্টনকে নিখুঁত বল বাড়িয়েছিলেন বুমৌস।

ডার্বির মতো হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে ২৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোলে পিছিয়ে যাওয়া মানে বিশাল ধাক্কা। বেশ হতাশ হয়ে পড়েন লাল-হলুদ তারকারা। বিশেষ করে তাদের মিডফিল্ডাররা। ২৭ মিনিটের মধ্যে তাদের দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হামতে ও সিডোল একবার করে হলুদ কার্ড দেখে ফেলেন। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখার জায়গাতেও চলে গিয়েছিলেন হামতে। কিন্তু সেরকম কিছু হওয়ার আগেই তাঁকে বসিয়ে অমরজিৎ কিয়ামকে নামান কোচ। ৩৩ মিনিটের মাথায় চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান অরিন্দমও। তাঁর জায়গায় নামেন শুভম সেন, যিনি সারা ম্যাচে বেশ দক্ষতার সঙ্গে গোল সামলান। বেশ কয়েকটি অবধারিত গোলও বাঁচান।     

ততক্ষণে মাঠে প্রায় আগুন ঝরাতে শুরু করেন এটিকে মোহনবাগানিরা। ৩১ মিনিটের মাথায় চতুর্থ গোলটি করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন কাউকো। ফের গোল তৈরি করার কাজটা করেন প্রীতম। তবে আগেরবারের মতো ডানদিক নয়, বাঁ দিক দিয়ে। প্রীতমের ক্রসে কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি ফিনল্যান্ডের ইউরো দলে খেলা ফুটবলার। বলে টোকা দিতে পারলেই গোল ছিল অবধারিত।

এতক্ষণ ধরে স্পটলাইট যাঁকে খুঁজছিল, সেই হুগো বুমৌস তাঁর জাদু দেখাতে শুরু করেন প্রথমার্ধের শেষে। ৩৮ মিনিটের মাথায় গোলের বাঁ দিক থেকে কঠিন কোণে দ্বিতীয় পোস্টের দিকে একটি ক্রস দেন গোলের উদ্দেশ্যেই। কিন্তু পোস্টের কয়েক ইঞ্চি বাইরে দিয়ে বল বেরিয়ে যায়। তবে এ বারেও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারলে গোলটা পেয়ে যেতেন কাউকো।

এতক্ষণ এটিকে মোহনবাগানের দাপটে কার্যত দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল লাল-হলুদ খেলোয়াড়দের। প্রথমার্ধের শেষ দিকে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করে। নাওরেম মহেশ ও পেরোসেভিচ গোলে শট নিলেও শেষে কাজের কাজ হয়নি। মহেশের দূরপাল্লার শট আটকে দেন অমরিন্দর ও পেরোসেভিচের শট ব্লক করে দেন প্রীতম। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা ম্যাচে একটিও গোলে শট রাখতে পারেনি এসসি ইস্টবেঙ্গল, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ পাঁচটি শট নেয় গোলে।

দ্বিতীয়ার্ধে এসসি ইস্টবেঙ্গলের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মর্চেলার জায়গায় নামানো হয় মিডফিল্ডার আমির দার্ভিসেভিচকে। তবে শুরুর দিকে তার কোনও সুফল পায়নি লাল-হলুদ শিবির। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে হাবাস বলেছিলেন, তাঁর দল ৯০ মিনিট সমান তীব্রতা-সহ খেলবে। এ দিনের খেলায় তাঁর সেই কথারই অনেকটা প্রতিফলন দেখা যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও বিপক্ষকে সমান চাপে রাখে তারা। দশ মিনিটের মধ্যেই আরও একজন খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে বাধ্য হন দিয়াজ, ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড় চোট পেয়ে যাওয়ায়। তাঁর জায়গায় নামেন আদিল খান। ৫৯ মিনিটে সিডোলকে বসিয়ে ড্যানিয়েল চিমাকেও নামানো হয়।

 তবে এটিকে মোহনবাগানের গোলসংখ্যা বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা কোনও ভাবেই থামাতে পারেনি তারা। ৫৬ মিনিটে বক্সের মধ্যে গোলের সামনে কাউকোকে গোলের বল সাজিয়ে দেন বুমৌস। কিন্তু কাউকো গোলে শট নেওয়ার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়ে বলের দখল নেন গোলকিপার শুভম। ৫৮ মিনিটে মনবীর বাঁ দিক দিয়ে উঠে ফের গোলে শট নেন, যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

এ দিন যে একটিও শট গোলে রাখতে পারেননি এসসি ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা। সেই প্রবণতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই সময়ে চিমাকে নামান দিয়াজ। তিনি নামার পরে এসসি ইস্টবেঙ্গল খেলায় ফেরার চেষ্টা শুরু করে এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখা যায় তাদের খেলায়। যার জেরে মনবীরকে নেমে আসতে হয় রক্ষণে। তবে কাজের কাজ কিছু করতে পারেননি চিমারা।

শেষ দিকে অন্তত একটি গোলশোধ করার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে এসসি ইস্টবেঙ্গল। তৎপর হয়ে  উঠতে দেখা যায় আন্তোনিও পেরোসেভিচকেও। ৮৫ মিনিটের মাথায় বাঁ দিক দিয়ে উঠে অসাধারণ ক্রসে বল দিয়েছিলেন গোলের সামনে থাকা চিমার মাথায়। কিন্তু চিমার হেড গোলের বাইরে চলে যায়।

অন্য দিকে, হাবাসও গোলসংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন। সেই কারণেই ৬৭ মিনিটের মাথায় বুমৌসের জায়গায় ডেভিড উইলিয়ামসকে নামান। জলের বিরতির পরে প্রবীর দাসকেও নামতে দেখা যায় লিস্টন কোলাসোর পরিবর্তে। লাল-হলুদ বাহিনী যতই খেলায় ফেরার চেষ্টা চালাক, এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণ বহাল ছিল। রয় কৃষ্ণা ৮৭ মিনিটে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন বিপক্ষের বক্সের। অসাধারণ ভাবে তাঁর পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে তা ক্লিয়ার করেন আদিল খান।

শেষের কয়েক মিনিট যে খেলাটা খেলে এসসি ইস্টবেঙ্গল, সেই খেলা এ দিন অন্তত মিনিট ৪৫ খেলতে পারলে বোধহয় স্কোরবোর্ডের চেহারাটা একেবারে অন্য রকম হত। তবে শেষ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে ওঠা মনবীরের ক্রস থেকে বল পেয়ে যে গোল করতে ব্যর্থ হন ডেভিড উইলিয়ামস, সেটা তিনি গোলে রাখতে পারলেও এটিকে মোহনবাগান ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত।

জোড়া ম্যাচের দু’টিতেই জিতে এটিকে মোহনবাগান পৌঁছে গেল লিগ টেবলের শীর্ষে। এই ম্যাচের শেষ পর্যন্ত হাবাসের দলই ছ’পয়েন্ট পেয়েছে। অন্য দিকে দুই ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গল আপাতত ন’নম্বরে। 

এসসি ইস্টবেঙ্গল দল: অরিন্দম ভট্টাচার্য (গোল) (অধি) (শুভম সেন), টমিস্লাভ মর্চেলা (আমির দার্ভিসেভিচ), জয়নার লরেন্সো, রাজু গায়কোয়াড় (আদিল খান), ফ্রানিও পর্চে, ড্যারেন সিডোল (ড্যানিয়েল চিমা), মহম্মদ রফিক, লালরিনলিয়ানা হামতে (অমরজিৎ সিং কিয়াম), বিকাশ জায়রু, আন্তোনিও পেরোসেভিচ, নাওরেম মহেশ।

এটিকে মোহনবাগান দল: অমরিন্দর সিং (গোল), শুভাশিস বোস, প্রীতম কোটাল (অধি), লেনি রড্রিগেজ, দীপক টাঙরি (আশুতোষ মেহতা), কার্ল ম্যাকহিউ, ইওনি কাউকো, হুগো বুমৌস (ডেভিড উইলিয়ামস), মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো (প্রবীর দাস), রয় কৃষ্ণা।

পরিসংখ্যানে ম্যাচ

বল পজেশন: এসসি ইস্টবেঙ্গল ৫৪% - এটিকে মোহনবাগান ৪৬%

সফল পাস: ৩৬০/৪৪৪ (৮১%) - ২৮৪/৩৩৯ (৮৪%), গোলে শট: ০-৫, ফাউল: ১০-১৩, ইন্টারসেপশন: ১৪-১২, কর্নার: ৪-২, হলুদ কার্ড: ৩-০, ম্যাচের সেরা: ইওনি কাউকো।