Picture Courtesy: AFC Media

ফুটবলের ভারতের সোনার দিন ফেরানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আইএসএল-এর অনিরুদ্ধ, আসিকরা। যুব সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ। দেশের যুব সমাজের প্রাণপুরুষ স্বামী বিবেকানন্দ যুব সমাজ গঠনে গীতা পাঠের থেকে ফুটবল খেলাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তাই তাঁর জন্মদিনে ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে চর্চা। ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুপরিকল্পিতভাবে তৈরি করতে বদ্ধপরিকর ভারতের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা। তারই প্রতিফলন ভারতের এএফসি এশিয়ান কাপের দলে। গড় বয়সের বিচারে তৃতীয় কনিষ্ঠতম দল ভারত।

ভারতের আগে রয়েছে ভিয়েতনাম ও ইরাক। ভিয়েতনাম দলের গড় বয়স ২৩.২৩ বছর আর ইরাকের ২৪ বছর। ভারতীয় দলের গড় বয়স ২৪.৮৩ বছর। এই একঝাঁক প্রতিশ্রুতিমান যুব ফুটবলারের প্রভাবে প্রাণের স্ফুর্তিতে টগবগ করে ফুটছে ভারতীয় দল। তারই প্রতিফলন চোখে পড়ছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিটি খেলায়।  অনিরুদ্ধ থাপা, আসিক কুরিয়ান, শুভাশিস বোস, উদান্তা সিং হলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

ভারতীয় দলের সব থেকে কম বয়সী ফুটবলার হলেন অনিরুদ্ধ থাপা। ২০ বছরের এই ফুটবলার আইএসএল-এ খেলেন চেন্নাইয়ান এফসি-তে। ইতিমধ্যেই দেশের জার্সিতে ১০টি ম্যাচ খেলেছেন মাঝমাঠের এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

ভারতীয় দলের আর এক উঠতি প্রতিভা হলেন আসিক কুরিয়ান। কেরালার এই ফুটবলার খেলেন এফসি পুনে সিটিতে। ইতিমধ্যেই দেশের হয়ে ১১টি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করে ফেলেছেন ২১ বছর বয়সী এই লেফট উইঙ্গার। অন্যদিকে লেফট ব্যাকে ভারতীয় রক্ষণের অন্যতম ভরসা হলেন শুভাশিস বোস। ২৩ বছর বয়সী এই ফুটবলার খেলেন মুম্বই সিটি এফসিতে। ইতিমধ্যেই দেশের হয়ে ১৩টি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন শুভাশিস।

ভারতীয় দলে দুরন্ত ফর্মে থাকা উদান্তা সিং নজর কেড়েছেন দেশবাসীর। আইএসএল-এ বেঙ্গালুরু এফসিতে খেলেন মণিপুরের এই ফুটবলার। রাইট উইঙ্গার হিসাবে দেশের হয়ে ১৭টি ম্যাচ খেলে একটি গোল করেছেন উদান্তা। 

ভারতের জাতীয় দলে ইয়ং ব্রিগেডকে সুযোগ দেওয়াই শুধু নয় ওদের পক্ষে নিয়মিত সওয়াল করে যান কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন। এএফসি এশিয়ান কাপে অনিরুদ্ধ থাপা, আশিক কুরিয়ানদের সুযোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এএফসি এশিয়ান কাপ বিশাল বড় প্ল্যাটফর্ম। এই মঞ্চে পারফর্ম করতে গিয়ে ওরা হয়ত ভুল করতে পারে। কিন্তু ওদের উপর ভরসা রাখলে ভবিষ্যতে ভাল কিছু করে দেখাবে। একদম অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল কোচের এই কথা। কোচের ভরসার মর্যাদা রাখল ভারতের ইয়ং ব্রিগেড।

এএফসি এশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত পেনাল্টি হাসিল করে আশিক কুরিয়ানের আক্রমণ থেকে। সুনীলের থেকে ভারতের দ্বিতীয় গোল আসে উদান্তা, আশিকের পা ঘুরে আসা বল থেকে। আর ভারতের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন অনিরুদ্ধ থাপা। যা এক কথায় দুরন্ত। উদান্তার বাড়ানো বলে নিখুঁত প্লেসিং। এভাবেই ভারতীয় ফুটবলে সুদিন ফেরানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে ভারতের ইয়ং ব্রিগেড।

ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তুলে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে আইএসএল-এর। দেশের এই অভিনব ও উন্নতমানের ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রতিটি দলে সুযোগ পাচ্ছে প্রতিশ্রুতিমান বেশ কিছু ফুটবলার। আইএসএল-এর উন্নত পরিকাঠামো, আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিংয়ের সুযোগ পেয়ে প্রতিভার সম্পূর্ণ বিকাশ ঘটছে নিশু কুমার, লালিংজুয়ালা ছাঙতে, চিংলেনসানা সিং, সাহাল আবদুল সামাদদের। বেঙ্গালুরু এফসির নিশু কুমার, দিল্লি ডায়নামোসের লালিংজুয়ালা ছাঙতে, এফসি গোয়ার চিংলেনসানা সিং, কেরালা ব্লাস্টার্সের সাহাল আবদুল সামাদদের সঙ্গে আইএসএল-এর প্ল্যাটফর্মে তৈরি হচ্ছে আরও একঝাঁক ভবিষ্যৎ তারকা।

কোচের পছন্দের এই প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলাররা এএফসি এশিয়ান কাপ ২০১৯-এ সুযোগ না পেলেও ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ গড়তে ওরা মিশন ২০২৬-এর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবে তা বলে দেওয়াই যায়।