এটিকে মোহনবাগান ছেড়ে তারকা ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গন সই করলেন বেঙ্গালুরু এফসি-তে। গত মাসের শেষ দিকে এটিকে মোহনবাগান তাঁকে বিদায় জানায়। তার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। শেষ পর্যন্ত রয় কৃষ্ণা, প্রবীর দাস, হীরা মন্ডল, হাভিয়ে হার্নান্ডেজদের সঙ্গে যোগ দিলেন ভারতীয় দলের এই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার।  

রবিবার সকালে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে সন্দেশকে নেওয়ার খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা করে বেঙ্গালুরু এফসি লেখে, “রবিবারের চমক! বেঙ্গালুরু ফুটবল স্কুলে দলের অনুশীলনে আত্মপ্রকাশ করলেন সন্দেশ ঝিঙ্গন। সমর্থকদেরই প্রথম এই সুখবর দেওয়া হল। ঝিঙ্গন এখন আমাদের”।

গত ২৮ জুলাই সন্দেশকে ক্লাবের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে বিদায় জানায় এটিকে মোহনবাগান। লেখা হয়, “এই ক্লাবে (ফুটবল জীবনের) অনেকটা সময় কাটানোর জন্য ধন্যবাদ, সন্দেশ ঝিঙ্গন। ভবিষ্যতের জন্য রইল অনেক শুভেচ্ছা”। এর পরে তাঁর নতুন ক্লাব নিয়ে অনেক জল্পনা চলে। অনেকে তাঁকে লাল-হলুদ শিবিরেও দেখতে পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু সুনীল ছেত্রীর দলেই যোগ দিলেন পঞ্জাবের এই ডিফেন্ডার।   

১৩ মাস মাঠের বাইরে থাকার পর ২০২০-২১ মরশুমের আগে এটিকে মোহনবাগানের চুক্তিতে সই করেছিলেন সন্দেশ। দলের নেতৃত্বের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। সেই মরশুমে এটিকে মোহনবাগানের হিরো আইএসএল ফাইনালে পৌঁছনোর অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন তাঁকে ২০২০-২১ মরশুমের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারও দেয়।

কিন্তু গত বছর অগাস্ট মাসে এটিকে মোহনবাগান মলদ্বীপে এএফসি কাপে খেলতে যাওয়ার আগেই সন্দেশ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব এইচএনকে সিবেনিকে যোগ দেন। কিন্তু সেখানে তাঁর সময় খুব একটা ভাল কাটেনি। চোটে জর্জরিত সন্দেশের আর ওই ক্লাবের হয়ে মাঠে নামা হয়নি। এর মধ্যেই কলকাতার ক্লাবটি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাই দেশে ফিরে আসারই সিদ্ধান্ত নেন সন্দেশ। তবে চোট সারিয়ে সারা মরশুমে ন’টির বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি।

২০১১-১২-য় আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব সিকিম ইউনাইটেডের হয়ে আত্মপ্রকাশ করার পর টানা ছ’বছর কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে মাঠে নামেন। হিরো আইএসএলের প্রথম মরশুমেই ইমার্জিং প্লেয়ার অফ দ্য লিগ নির্বাচিত হয়েছিলেন ঝিঙ্গন। ২০১৬-র হিরো আইএসএলে দলকে ফাইনালেও তুলেছিলেন তিনি। তবে ফাইনালে এটিকে এফসি-র কাছে হেরে যান। ২০১৭-১৮ সালে কেরালা ব্লাস্টার্সের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয় তাঁকে। তবে ২০১৯-২০ মরশুমে খেলতেই পারেননি ২৮ বছর বয়সি এই ডিফেন্ডার।

সম্প্রতি ভারতীয় দলের হয়ে যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স দেখান তিনি। অর্জুন পুরস্কার পাওয়া সন্দেশ ঝিঙ্গন সম্প্রতি এশিয়ান কাপ ২০২৩-এর মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করা ভারতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার। চলতি মাসে কলকাতায় হয়ে যাওয়া বাছাই পর্বের তিনটি ম্যাচে ভারত মাত্র একটি গোল খায়, যে কৃতিত্ব দাবি করতেই পারে সন্দেশের নেতৃত্বে খেলা ভারতীয় দলের রক্ষণ বিভাগ।

গত কয়েক বছর ধরেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেছেন ২৮ বছর বয়সি এই পঞ্জাবি ফুটবলার। সম্প্রতি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে তরুণ স্টপার আনোয়ার আলির সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষের আক্রমণ বিভাগকে কড়া পাহাড়ায় রাখেন তিনি।  

আসন্ন ডুরান্ড কাপে বেঙ্গালুরু এফসি রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন এফসি গোয়ার সঙ্গে একই গ্রুপে। ‘এ’ গ্রুপে তারা ছাড়াও রয়েছে কলকাতার মহমেডান স্পোর্টিং, জামশেদপুর এফসি এবং ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। বুধবারই তাদের প্রথম ম্যাচ জামশেদপুরের বিরুদ্ধে। তবে এই টুর্নামেন্টে শুরু থেকেই সন্দেশকে নামাবে কি না বেঙ্গালুরু, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।