চতুর্থ হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের প্রথম চারে পৌঁছনোর লড়াইয়ে নিজেদের সম্ভাবনা নতুন করে জাগিয়ে তুলল স্টিভ কোপেলের দল জামশেদপুর এফসি। মরসুমে প্রথম ঘরের মাঠে জয় পেল জামশেদপুর, আটকে দিল জেমসের অশ্বমেধের কেরালাকে।

গোল আটকানো নিয়ে সমস্যা ছিল না জামশেদপুর এফসি-র, সমস্যা ছিল গোল পাওয়া নিয়ে। দ্রুততম গোল করে জেরি মাউইমিংথাঙ্গা উদ্দীপ্ত করে তুলেছিলেন নিজের দলকে। হিরো আইএসএল-এর ইতিহাসে দ্রুততম গোল করে জেরি এগিয়ে দিয়েছিলেন জামশেদপুরকে, ২৩ সেকেন্ডে। সেন্টার থেকে নিজেদের পায়ে বলের দখল রেখে বক্সের মাথায় পৌঁছে অসীম বিশ্বাসের দুর্বল শট ছোঁ মেরে নিজের দখলে এনে কেরালার গোলরক্ষক পল রাচুবকাকে কাটিয়ে ফাঁকা গোলে বল পাঠিয়েছিলেন ভারতীয় তারকা। ওয়েস ব্রাউন এবং সন্দেশ ঝিঙ্গনের মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারও যেন তৈরি ছিলেন না এত দ্রুত আক্রমণের জন্য।

দ্রুততম গোল করতে গিয়ে জেরি ভাঙলেনও কেরালা ব্লাস্টার্সেরই প্রাক্তন স্ট্রাইকার ক্রিস ড্যাগনালের ২৯ সেকেন্ডে গোলের রেকর্ড। ক্রিস সেই রেকর্ড করেছিলেন ২০১৫ সালে দ্বিতীয় হিরো আইএসএল-এ, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে। শেষ তিন ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট পাওয়া জামশেদপুর যেন তেতে গিয়েছিল ওই দ্রুততম গোলেই! ফলে, আইএসএল-এ অভিষেক-মরসুমে ঘরের মাঠে প্রথম জয় পেল জামশেদপুর।

জেআরডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে জামশেদপুর দ্বিতীয়বার এগিয়ে যায় ৩২ মিনিটে। এবারও সেই জেরি-অসীম জুটি। তবে, ভূমিকা উল্টে গিয়েছিল। এবার জেরির ছোঁয়ায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন অসীম। ঝিঙ্গন চেষ্টা করেও বলের নাগাল পাননি। ঠাণ্ডা মাথায় অসীম গোল করে যান, এই ম্যাচে তাঁকে শুরু থেকে খেলানোর সিদ্ধান্তকে ঠিক প্রমাণ করেন অসীম।

তবে, দুটি গোলের ক্ষেত্রে তো বটেই, ম্যাচেও বারবার কেরালার রক্ষণের ডানদিক ভঙ্গুর থেকেছিল। রাইট ব্যাক স্যামুয়েল শাদাপকে কখনও আত্মবিশ্বাসী মনে হয়নি। তাঁর দিক থেকেই বারবার আক্রমণে উঠছিল জামশেদপুর। যা দেখে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই শাদাপকে তুলে নিয়ে লাকিচ পেসিচকে নামিয়েছিলেন ডেভিড জেমস। গোল দরকার ছিল কেরালার। তাই ঝিঙ্গন-ব্রাউন-লালরুয়াথারা, তিনজনকে রক্ষণে রেখে ৩-৪-৩ ছকে চলে গিয়েছিলেন জেমস। কিন্তু, ভারতে কোচিংয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ ম্যাচে প্রথম হার বাঁচাতে পারেননি তবুও।

তবে ষষ্ঠবার ক্লিন শিট রাখতে পারেননি সুব্রত, ৬ মিনিটের ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে গোল হজম করেন তিনি। ঝিঙ্গন ক্রস রেখেছিলেন জামশেদপুর বক্সে, যা শৌভিকের পায়ে লেগে উঠে গিয়েছিল। হিউমের পরিবর্ত সিফনেওস মাথা ঠেকিয়ে এবারের আইএসএল-এ পেলেন তাঁর চতুর্থ গোল।

৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট ছিল জামশেদপুরের, ছিল অষ্টম স্থানে। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট তাদের নিয়ে গেল গতবারের চ্যাম্পিয়ন এটিকে-র ওপরে, সপ্তম স্থানে, ১৩ পয়েন্ট নিয়ে। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই থেকে গেল কেরালা ব্লাস্টার্স।

এখানে ম্যাচ হাইলাইট দেখুন: