আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ১-১ ড্রয়ের পরে বিশ্বকাপের এশীয় বাছাই পর্বে ভারতের লড়াই কার্যত শেষ হয়ে গেলেও দলের উন্নতিতে খুশি ও গর্বিত ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচ। দলের খেলোয়াড়দের হাল না ছাড়ার প্রবণতা ও তাঁদের ফিটনেস মুগ্ধ করেছে তাঁকে। দুশানবের অনভ্যস্ত আবহাওয়া ও কৃত্রিম ঘাসের মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েও যা লড়াই করেছে তাঁর দল, তাতে তিনি যথেষ্ট খুশি বলে সাংবাদিকদের জানান স্টিমাচ। এমনকী, আগামী মঙ্গলবার ওমানের বিরুদ্ধে এক ঝাঁক নতুন ছেলেকে মাঠে নামাতে হলেও যে দ্বিধা করবেন না তিনি, তাও জানিয়ে দিলেন।    

রাতে ম্যাচের পরে স্টিমাচ বলেন, “দলের খেলায় আমি খুশি। বিশেষ করে দ্বিতীয়াযার্ধের খেলায়। নতুন দল তৈরি করছি আমরা। ভারত এখন আসল ফুটবল খেলছে। আমরা এমন একটা দল হয়ে উঠছি, যাদের হারানো মোটেই সোজা নয়। দলের নতুন খেলোয়াড়রা অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এই অভিজ্ঞতা ওদের ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ভারত এর আগে কখনও পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়াতে জানত না। শেষ দুই ম্যাচেই আমাদের ছেলেরা তাই করল। আমরা বুঝিয়ে দিলাম, আমরা হাল ছাড়তে জানি না। দলের ছেলেদের মধ্যে সেই চারিত্রিক দৃঢ়তা রয়েছে। ওদের মধ্যে অসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা আছে। আমি গর্বিত আমার দল নিয়ে”।

বৃহস্পতিবার ভারত যত সুযোগ পেয়েছে, তাতে তাঁদেরই জেতা উচিত ছিল বলে মনে করেন ফ্রান্স বিশ্বকাপে সেমিফাইনালিস্ট দলের সদস্য স্টিমাচ। তাঁর বক্তব্য, “আমরা বিপক্ষের চেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, তা কাজে লাগাতে পারিনি। ম্যাচটা বেশ আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য হয়েছে। আমাদের আরও বেশি প্রাপ্য ছিল”।

কৃত্রিম ঘাসের মাঠে বল বেশ দ্রুতগতিতে ছুটছিল বলে ভারতীয়দের কোনও অসুবিধা হয়নি বলেই জানালেন কোচ। তিনি বলেন, “মাঠ যথেষ্ট ভাল ছিল। কৃত্রিম ঘাস বলে বল দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। ছেলেরা এটা উপভোগ করেছে”।

চার ম্যাচ থেকে মাত্র তিন পয়েন্ট পাওয়ার পরে ভারতের বাছাই পর্বের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া এখন বেশ কঠিন। শেষ ম্যাচে ওমানকে হারালেও তা সম্ভব হবে কি না, নিশ্চিত নয়। তবু দলের উন্নতিতে বেশ খুশি কোচ। স্টিমাচের মতে, “দল অনেক উন্নতি করেছে। ম্যাচটা যত এগিয়েছে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে থাকবে, কাতারের বিরুদ্ধেও শেষ মুহূর্তে আমরা একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিলাম। দলের ফিটনেস খুব ভাল জায়গায় রয়েছে। এত ঠান্ডায়, গতিময় ফুটবল খেলেও কিন্তু কোনও খেলোয়াড়েরই ক্র্যাম্প হয়নি। ছেলেদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। অথচ কিছু সহজ পাসের ক্ষেত্রে খুব অদ্ভূত কিছু ভুল হচ্ছে। আজও আমরা ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিট আধিপত্য করেছি। কিন্তু তার পরে কোনও অজানা কারণে, চাপ ছাড়াই সেই নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাছ থেকে ওদের দিকে চলে যায়। আমরাই আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিই। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের ছেলেরা খেলায় ফিরে আসে যথেষ্ট শক্তিশালী ভাবে। জেতার জায়গায় চলে এসেছিলাম আমরা”।

চার দিন পরেই ওমানের বিরুদ্ধে পরবর্তী ম্যাচ ভারতের। সেই ম্যাচ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে কোচ বলেন, “কাতার ও ওমান এই গ্রুপে ফেবারিট। তাই ওমান ম্যাচ কঠিন হবে। গুয়াহাটিতে যে ওমানের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম আমরা, এখন আরও শক্তিশালী সেই ওমান। আমাদের এখন দেখতে হবে আজকের কঠিন ম্যাচের পর নিজেদের কত দ্রুত ফের প্রস্তুত করে তুলতে পারি আমরা। তবে আমাদের স্কোয়াডে যথেষ্ট খেলোয়াড় আছে। ওমানের বিরুদ্ধে নতুন ছেলেদের নিয়ে দল নামাতে হলেও দ্বিধা করব না”।